- Get link
- X
- Other Apps
©"কলকাতা বর্গি ও খাল" ©
আগের দুইটি পর্বে আমরা কলকাতা নামকরণের ইতিহাস সম্পর্কে দুটি ভিন্ন মতামত জেনেছি। আজকের পর্বে আমরা সেই রকমই আরেকটি মতামত নিয়ে আলোচনা করব।
আমরা সকলেই ছোটবেলায় একটি কবিতা শুনেছি তা হল, "খোকা ঘুমল পাড়া যুরল বর্গি এল দেশে।" এই বর্গিদের দেশে আসা নিয়েই আজকের গল্পটি। এই মতানুসারে"খাল কাটা" এই কথা থেকেই হয়েছে কলকাতার নামকরন। তাহলে প্রশ্ন আসে কেন কাটা হল এই খাল? কোথায় এই খাল কাটা হল? এই প্রথম প্রশ্নের সাথেই যুক্ত বর্গিদের কথা। তাহলে আগে আমাদের জানতে হয় কে এই বর্গিরা? আসলে বর্গি কথাটা এসেছে ফরাসি শব্দ "বার্গির" থেকে, তবে এর আক্ষরিক অর্থ হল "মারাঠা সৈন্য"। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন সেই শিবাজীর মারাঠা সৈন্য। মোগল সম্রাজ্য যখন পতনের দিকে মানে গদিতে তখন ঔরঙ্গজেব ঠিক সেই সময় উত্থান হয় মারাঠা শক্তির একে একে অনেক গুলি রাজ্য দখল করে নেন শিবাজী রাজ।
তারই এক অনুগত শিষ্য রঘুজী ভোসলে ঠিক করেন পূর্বে বঙ্গ-বিহার-উড়িষ্যা দখল করবেন। সেই অনুযায়ী ১৭৪২ সালে তার সেনাপতি ভাস্বর কুলহাৎকার নেতৃত্বে বিশাল সৈন্য বাহিনী আক্রমণ করে বাংলা বিহার ও উড়িষ্যায়। এই কুলহাৎকার পদবীটি যেহুতু বড় তাই তাকে বঙ্গদেশে ভাস্বর পন্ডিত বলেই ডাকা হত। এই ভাস্বর পন্ডিত একে একে যুদ্ধে জয় করতে থাকেন বিহার উড়িষ্যা সহ বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এমনকি বীরভূম, মেদিনীপুর , বর্ধমান, হুগলি পর্যন্ত তার দখলে চলে আসে। সেই সময় বাংলার সিংহাসনে ছিলেন মুর্শিদাবাদের আলীবর্দী খা। তিনি মারাঠাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন এবং এই যুদ্ধ ১৭৪৯ অব্দি চলেছিল। মারাঠারা নিজেদের আস্তানা বানিয়ে ছিল বর্ধমানের কাটোয়া এবং মেদিনীপুর অঞ্চলে। আলীবর্দী খা সন্ধির ফাদ পেতে ভাস্বর পন্ডিতকে হত্যা করলে, স্বয়ং রঘুজী ভোসলে যুদ্ধ নামেন এবং একের পর এক গ্রাম ধংস করতে থাকেন। এই ভয়েই সেই সময়কার গ্রামের জমিদার অথবা অর্থবান ব্যক্তিরা কলকাতার দিকে চলে আসেন। এইটা বলা অত্যুক্তি হবে না যে এই কারনেই কলকাতা প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায় এবং এই কারণেই ইংরেজ যে শাষন ব্যবস্থা পরবর্তী কালে শুরু হয়েছিল তার ভিত্তি স্থাপন হয়। আসলে মারাঠারা ছিল ভক্ষক, রক্ষক নয়।
ঠিক এই সময় যখন সবাই বর্গিদের আক্রমণে দিশেহারা তখন কলকাতা শহর ও কাপছে যে কোনো দিন বর্গিদের প্রবেশ ঘটতে পারে। সেইজন্যই বনিক ও অর্থবান শ্রেণীর লোকেরা শরনাপন্ন হন ইংরেজদের। ইংরেজরা নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করে তিনটি সিদ্ধান্তে উপনীত হন।
১। তাদের দূর্গ অর্থাৎ ফোর্ট উলিয়ামের চারিপাশে রেলিং দেওয়া হবে।
২। ৭ টি ট্যাঙ্ক ও যুদ্ধ জাহাজ আনা হবে। যা জল ও স্থল পথে পাহারা দেবে এবং
৩। বাগবাজার থেকে চৌরঙ্গী অব্দি ১১ কিমি লম্বা খাল কাটা হবে। যা চওড়াতে প্রায় ২০ হাত। কিন্তু এর জন্যে যা অর্থের প্রয়োজন তা এখন ইংরেজরা দিলেও পরে স্থানীয় অধিবাসীদের তা শোধ করতে হবে।
সেই অনুযায়ী শুরু হয় খাল কাটার কাজ প্রায় অর্ধেক খাল কাটাও হয়ে গেছিল। কিন্তু এই সময় মারাঠা-বঙ্গের সন্ধি হয় এবং বর্গিরা সব ফিরে যায়। এই বাগবাজার থেকে বেগবাগান অব্দি যে খাল কাটা হয়েছিল তাকেই "মারাঠা ডিচ" বলা হয়। এর নাম থেকে কলকাতা বাসীদের "ডিচার" বলা হত। ১৭৯৯ সালে এই খাল বুজিয়ে রাস্তা তৈরীর কাজ শুরু হয় যা এখন লোয়ার ও আপার সার্কুলার রোড নামে পরিচিত। বাগবাজারে এখন ও মারাঠা ডিচ লেন দেখা যায়। এই খাল কাটা থেকেই হয়েছে কলকাতা নামকরণ।
প্রথম পর্ব দেখতে হলে এখানে ক্লিক করুন
দ্বিতীয় পর্ব দেখতে হলে এখানে ক্লিক করুন
To download any movies you can request us on our
- Get link
- X
- Other Apps
welcome to cinepachali the house for movie lovers. Here we gonna build a healthy movie community where all movie lovers can discuss about anything. Join our fb page and youtube channel for further info.
Comments
Post a Comment