2021 Oscars winner list

কলকাতার নামকরণের ইতিহাস পর্ব -২

  "কলকাতা, চুন ও শামুক"

                                                                                       🖋 সায়ন চক্রবর্তী

আগের পর্বে আমরা আলোচনা করেছি কি করে Calcium phosphate থেকে কলকাতার নামক‍রন হয়েছে অর্থাৎ খুলি থেকে কলকাতার নামকরন হয়েছে। আসলে খুলি বা হাড় যেসকল উপাদান দিয়ে তৈরি হয় তার মধ্যে অন্যতম হল Calcium phosphate । কিন্তু আজ আমরা কথা বলব আরেক Calcium মানে Calcium hydroxide নিয়ে। অর্থাৎ কলিচুন।  হ্যাঁ এই দ্বিতীয় তত্ত্ব অনুযায়ি কলিচুন থেকেই হয়েছে কলিকাতা নাম। এই মত অনুযায়ি কলিকাতা একটি বাঙালি শব্দ এবং এখানে 'কলি' কথার অর্থ 'কলিচুন' আর 'কাতা' মানে 'ভাটি' বা 'শামুক পোড়া'। অর্থাৎ কলিকাতা কথার আখ্যরিক অর্থ "চুনের ভাটি"। 




     এই মতটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১২৯৪ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাসে বিভা পত্রিকায়। লিখেছিলেন অঘোরনাথ দত্ত। তিনি লেখেন," এককালে কলিকাতা অথবা তার পার্শ্বে কোনো স্থানে অপরর্যাপ্ত পরিমাণে কলিচূর্ন প্রস্তুত হইত, সেই থেকে কলিকাতা নাম।" 
       ১৩২০ বঙ্গাব্দে 'ভারতবর্ষ' পত্রিকায় একটি প্রবন্ধে ইন্দুভূষন দে, এই একই মত প্রশন করেন। এর পর এই তত্ত্বের পক্ষে1938 সালে সাহিত্য পারিষদ পত্রিকাতে "কলিকাতা নামের ব্যুৎপত্তি" নামক একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়, যাতে লেখক সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় কলিচুন থেকে কলিকাতা নামকরণ সম্পর্কে কিছু তথ্য দেন।
সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়


     সুনীতি বাবুর এই বক্তব্যের সমর্থনে এবং আরো বিস্তৃত তদন্তে এগিয়ে আসেন বিনয় ঘোষ। তার ফলে আবিষ্কার হয় আরো নতুন তথ্য। ডিহি কলকাতা বলতে যে এলাকা বোঝাত, তার মধ্যে তিনটি রাস্তা ছিল চুন বা চুনারীদের নামে। ১/ চুনাপুকুর লেন, ২/ চুনাগলি, ৩/চুনাপট্টি।
     বর্তমানে স্ট্রান্ড রোডের উপর দিয়ে তখন গঙ্গার ধারা বইত, এবং এই চুনা পাড়া ছিল গঙ্গার খুব কাছেই। Report on the survey of calcutta, 1871:F.W. Simms এই রিপোর্টেই দেখা যায় যে অঞ্চলে চুনারীরা থাকত সেখানে প্রায় ৪০ টি পুকুর ছিল। উত্তর কলকাতায় পুকুরের সংখ্যা ছিল ৮৩২ টি এবং দক্ষিণ কলকাতায় পুকুরের সংখ্যা ছিল ১৯১ টি। আরো দক্ষিণে বা আশে পাশে ডোবা, জলা ও পুকুরে ভর্তি ছিল চৌরঙ্গী, ভবানীপুর, বালীগঞ্জ বা কালীঘাট প্রভৃতি অঞ্চল। পুকুর এবং শামুকের এত প্রাচুর্যের মধ্যে কলিচুনের বিরাট শিল্প গড়ে ওঠা খুব স্বাভাবিক। 






     এই গুলিই ছিল কলিচুন থেকে কলিকাতা নামকরণ হওয়ার পেছনে যুক্তি। কিন্তু রাধারমণ মিত্র তার লেখা 'কলিকাতা দর্পণ'  প্রবন্ধে সুনীতিবাবু এবং বিনয় ঘোষ প্রমুখের যাবতীয় মন্তব্যর বিরোধীতা করেছেন। তার মতে ১. কলী বা কলি যদি আরবি শব্দ হয়, তাহলে 'কলিকাতা' খাটি বাংলা শব্দ হতে পারেনা। এটা মিশ্র শব্দ- আরবি 'কলি' ও বাংলা 'কাতা' মিলিয়ে বাংলায় কলিকাতা। 
 ২. কলকাতায় সেই সময় যে পরিমাণ কলিচুন তৈরি হয়েছে, তা কি কাজে লেগেছে? কটা পাকাবাড়ির দেওয়াল চুনকাম করা হয়েছে? তখন আশেপাশের কটা পাকাবাড়ি ছিল?  
৩. পাড়ার অথবা জায়গার নাম "চুনা" হল কেন? কলি হল না কেন? আর যদি চুনাই হয়ে থাকে তাহলে "চুনাকাতা" নয় কেন। এই রকম বহু তথ্য রাধারমণ বাবু তুলে ধরেন যার যুক্তি যুক্ত উত্তর সুনীতি বাবুদের কাছে ছিল না। 

কিন্তু কলিকাতা পৌরসভা এই তথ্যটি মানেন যে কলিচুন থেকেই এসেছে কলিকাতার নাম।

 এই ছিল আজকের দ্বিতীয় পর্ব। আপনাদের এই বিষয়ে কি মত তা অবশ্যই জানান কমেন্ট করে। যদি কিছু ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে মার্জনা করবেন। তৃতীয় পর্বে জানব বর্গিদের কলকাতায় আসার গল্প।

 ভালো লাগলে আমার YouTube চ্যানেলটি একটু Subscribe করবেন। ধন্যবাদ ❤️

প্রথম পর্ব দেখতে হলে এখানে ক্লিক করুন

If like it make sure to like comment and share the post.

You can also follow us on







Thank you.

To download any movies you can request us on our 

Comments